Wednesday, May 21, 2014

কাকভূষুণ্ডিনামা




এইখানে,
তিনটে ঠ্যাং কাটা ছায়ামুর্তি গতকাল রাত্রে ভীষণ নেচেছিলো
অক্ষম বার্ধক্যভাতার আয়োজন করে তীব্র রমণপ্রয়াস, ক্রমে,
সকল ক্লান্তি নদী হয়ে গ্যালো। এইখানে বিমর্ষ মুর্ধণ্য-ষ
পেট কেটে দ্যাখালো হিরণ্যকশিপু, ভোজরাজ দ্যাখালো সত্ব-রজ-তম
এবং অবশিষ্ট সসেমিরা অর্থভার হল ভানুমতির বাম জঙ্ঘায় তিল।
এখানেই, এভাবেই, পুরাকথা, ইতিহাস কেটে কেটে ছুড়ি চলে যায় অস্তরথে
করুণ সুর্যাস্তের আভা লাগে; তুমি এসো, কাল এসো,
যেখানেই যেভাবেই থাকো, মনে করে এসো
আগামীকাল সন্ধে ছটার সময় ট্রামডিপো থেকে আড়াইশো মিটার দূরে
মোচ্ছব হবে ঘোর
চাঁদের মরমী আলোয় হাওয়া দেবে হিল্লোল
ফুটপাথ ফুঁড়ে আচমকা বেরিয়ে আসবে চিরপরিচিত কেউ
যাকে চিনতে পারো নি কোনোদিন
মগজের অন্তঃসার কেটে পাকস্থলী বের করে আনবে সিন্ধবাদের বংশধর
কিন্তু তারা উচ্চ্বঘর!
এছাড়াও ক্ষুদিরামের ফাঁসি,
ভুবনের কানকাটা মাসি
সকলেই নিমন্ত্রিত, অতএব তুমি এসো, সুনিতম্বিনী
সম্ভব হলে শাঁখ বাজিও।



ইতিমধ্যে কর্পোরেশনের ইঁদুর কর্পোরেশনেরই নর্দমা থেকে বেরিয়ে আসে
আরম্ভ হয় হলুদ আলো বরাবর দৌঁড়
তুমি, আমি, অমানিশা তখন জ্বলন্ত কাঠের চুল্লিতে বিবর্তনের রূপরেখা দেখছি
বঙ্গোপসাগরে ধনপতি কমলে কামিনী দেখছে
কিছু কিছু দ্বীপ নাকি সমুদ্রে হাপিস হয়ে যায়
কতো কিছু দ্যাখা হয়ে গ্যাছে মানুষের
তবু নিরাময় নেই, চুপিচুপি কালোকালো হাওয়া বয় পিছে
সামনে নিশ্চিন্ত দিকচক্রবালে সোনালী এবং সাদা পালক সমন্বিত পাখি ওড়ে দিনমান
রাতভর জোনাকির মতো ফুল্কি ওড়ে ঝাপসা শহীদবেদী থেকে
শতচ্ছিন্ন বাগদাদে বসেছেন বাদশাহ, দূরে পাহাড়ে বৃষ্টি পড়ছে,
এইসব অমলিন মুহুর্তেই মানুষ ও মাছ একাকার হয়ে যায়, বনভৈঁসা হেলেদুলে নেমে পড়ে উপত্যকার তালাওয়ে, নিজের দেহরক্ষীদের নিজেরই ঘাতককে হত্যা করতে নিষেধ করেন লিওন ট্রটস্কি, দুর্দম ব্রহ্মপুত্র অনায়াসে সাঁতরে পারাপার করেন বৈষ্ণববীর শঙ্করদেব, অজৈব রাসায়নিক নদীর জল পান করে ভলকে ভলকে রক্তবমি করে গহীন বিরাট অরণ্যের দানোভল্লুক, ডিম্বাশয়ের খোঁজে আকুল আর্তিতে কেঁদে ওঠে শতকোটি শুক্রাণু যার প্রতিটির মুখে ও অন্তঃস্থে চারশো কোটি বছরের প্রাচীণতম স্মৃতি যখন আদিপিতা ও আদিমাতা একাসনে বসেছিল প্রথম জীবকাধার কোষে, এবং ধ্রুবতারা থেকে  ৪০ বছর পুরোনো আলো সহসা হাজির হয় পৃথিবীতে।



এইখানে এইসব ঘটেছিলো
রক্তে মাদল বাজছে
পাহাড়চুড়োয় ঘণ্টা বাজছে ঘটমান
এভাবেই চন্দ্র-তারকা-গ্রহরাজি থেকে অনিবার্য সংকেত এসে এই নিটোল গ্রহের মাটিতে গেঁথে যায়, গর্ভ-নীড়-ময় ছড়িয়ে দ্যায় ব্রোম্ভাণ্ডের সামগ্রিক ঠিকানা।
ইঁদুরগুলো মরে গেলে ফের হলুদ আলোর ওপার থেকে সাইকেলঘণ্টি বাজাতে বাজাতে বেরিয়ে আসবে তিনঠ্যাংকাটা ছায়ামুর্তিরা
ওরা স্তন্যপায়ী অথবা স্তন্যদায়ী অথবা দুটোই অথবা একটাও নয় কিনা ঠিক জানি না।  

No comments: