Saturday, October 19, 2013

কুলীন বনবিহারী



এমন দিনে বনবিহারী ঈষৎ স্তিমিত রহে। ঈশ্বর সদা দয়াবান। বিয়ের সময়কার কিছু থালাবাটি পড়ে ছিলো। হে থালা, হে বাটি, ক্ষণজন্মা এইসকল মুহুর্ত; এই যে হাত, এই যে পা ও মুখময় ভ্রূকুটি, তাতে সর্বস্ব বোধ হয়, বনবিহারী আর্ত। আমরা সেই অনন্য লগ্নে বনবিহারীকে চিনি নাই, সেই অপার্থিব প্রবেশমুহুর্তের কালগুলি, শরতে ও হেমন্তের খাদে দাঁড়িয়ে, অনেকাংশে সহজ হতে গিয়ে সকলসুদ্ধু মিলিয়ে যাওয়া, সেই শিশুও কি দেখেছিলো, মাতৃগহ্বরে উঁকি মেরে, নিয়ত আঁশটে জন্মদাগ খুঁজেছিলো হয় তো। ইতিহাস অনাবৃত থাকে, হকার ও হৃতবসন্ত স্থান্মাফিক সঙ্কুলান করে নেয়, আড়াআড়ি অথবা লম্বালম্বি।


বনবিহারীর শার্ট ময়লা, আস্তিনের এফোঁড় ওফোঁড়, সেই, সেবার, ট্রেণ চলে গেছিলো, গুনে গুনে সাঁইত্রিশটা বগি, মৃদু সুর্যাস্তকালে, সিঁদুর, আলতা রাঙিয়ে, মুহুর্তছটাক, কিছু তার হাতে বা আয়নায় তার হাতে, যেইদিকে হুইসল্-ধর্মী বহমানতা, এক থেকে বহু অর্থে, সেদিনকার বনবিহারীর শিক্ষা, এক বিন্দু থেকে সরলরেখা মেনে অজস্র বিন্দু, মলিন হতে হতে। বনবিহারীর অ্যাশট্রেতে কুপি জ্বলে না। বনবিহারী ঘরাঞ্চি নামিয়ে নিল।

দুপুরবেলা আনোয়ার এসেছিলো, বিকেলের আগ আগ দিয়ে চলে গেছে। স্থূলাঙ্গিনী বহুবল্লভ ও পরিব্রাজকের মৌলিক ব্যবধানগুলি তাদের - বনবিহারী ও আনোয়ারদের, আয়ত বলা চলে না, এ বিষয়ে কোনো প্রণালী আমাদের ডিকশনারীগুলিতে অনেক অনুসন্ধানেও পাওয়া যায় নি। এখন তাদের হাতগুলি বাড়িঘড়, মেঘ, লোম, চ্ছায়া, অতিমানবিক স্পৃহার মত কিছু দ্বীপ তামস এবং ভাসমান যথার্থ।
বনবিহারী দুই বাহু প্রসারিত করে। এবং তখনই, স্বয়ংসিদ্ধ বিদ্যুদ্গর্ভ খরলগ্নে পৃথিবীর হরেক লালনীল ছোটো ছোটো অস্তিত্বসচেতন বলগুলি লাফিয়ে লাফিয়ে কোটরে, মরালমিথুন শোকেসে, নীলাভা নাইটল্যাম্পে, ভীমার্জুন, সাত্যকি, ধৃষ্টকেতু, চেকিতান, কাশীরাজ, পুরুজিৎ, কুন্তিভোজ এট সেটেরা এট সেটেরা রে রে রে রোলে
আলগা ও অলক। 

বনবিহারী ঘরাঞ্চি যথাস্থানে রেখে দেয়।  

No comments: