Monday, February 25, 2019

আনম। উপহার,

এইখানে, যেইখানে খামারে উঠেছে সোনার ফসল ও কিংবদন্তী
এইখানে, যেইখানে মাটিতে রক্তের দাগ, বাতাসে মেঠোবাঁশী,
জীবনের জয়গান, যাপনের গ্লানি – আমরাও বাঁচি নি কি?
দেখি নি কি নিভৃত সূর্যাস্তের দেশে দ্বাদশ দেউল? ছুটি নি কি
আশ্চর্য সূর্যালোক থেকে অমোঘ সৌরলোকের পথে – আগামীর
ভূতে চেপে বর্তমান আবর্তে? আমিও তো প্রতারক, পলাতক
ক্রমে, কালহন্তারক – তবু, ছুঁয়ে থাকা, সময়ের তর্জনী, অনামিকা -
রূপ ম্লান হয়ে যায়
রস ম্লান হয়ে যায়
গন্ধ হয় স্মৃতির কোটরে বিলীন
তবু, বোধ জেগে থাকে
চোখ জেগে থাকে

এইখানে, এখানেই, বিষ থেকে অমৃতের পথে
অথবা অতলের কোনঠাঁ’য়ে – কুণ্ঠিত, মননের কুঠকলঙ্কিত বোঝা বয়ে
তেষ্টায় বুক ফাটে পথিক ও চাতক,
অথবা সদর্প, দাম্ভিক কোনো নাবিক মেরে ফ্যালে
নির্বিরোধী অ্যালবাট্রস-পাখি, শোনিতে শোনিতে লাল
হয় চাঁদ সদাগরের সাগর, অনাব্য হয় চৌদ্দ মধুকর-পথ
ফাটলে ফাটলে দাগ রাখে আকালের শিরা-উপশিরা
নীল হয় ব্যথা, অথবা স্নিগ্ধ, নীলকান্ত ভোরের হদিশে মাৎ
নীলকণ্ঠ পাখি – আমাদের - হয়ে যাওয়া, হয়ে ওঠা
স্বততঃ সরণশীল সমস্ত ব্যধি ও নিরাময় – দুই হাতে
বুক ঠেলে, উজানের সোঁতে – অবিরাম, অবিরল

এখানেই, ঠিক এইখানে, তুমি আছো
আঁধারেও আছো, আধারেও – আছো বলে
আলো জ্বলে, বহুদূর পথে – বাতিঘর, ঝড় বুকে
চিরকোজাগর!

আছো বলে, কালপুরুষের বকলশে
আটকে থাকে হীরের তরবারি,
হতেই তো পারতো বিদীর্ণ সমস্ত আকাশ তার এক কোপে!
জলপরী ভুলে যেতো ঝর্ণায় নাইতে
হতেই তো পারতো বৈঠায় ছইয়ে পাটাতনে একাকার
সকল ভরাডুবি ইতিহাস-প্রস্বর! – হয় নি তো,
হয়ে গ্যাছে কতো কিছু –
উত্তুরে হাওয়া আর দখিনা বাতাসে
মিলেমিশে এক হয়ে গ্যাছে ক্রন্দসী
ষাঁড়াষাঁড়ির বানের রাতে জেগেছে মাইফেল ধূম!

তবু হয় নি তো এ’রকম – চরম চাবুকে তার
শাসায়নি সময়, ভাসায় নি অসময় – রয়ে গ্যাছো,
রয়ে গেছি, ভিটামাটি জুড়ে, তল নেই যার
এ’মত সমুদ্দুরে!


No comments: