প্রথম পরিচ্ছেদ - নেত্যকালি ও মদনমোহন
অরুণ ঘরেই ছিলো। চারুবোতি নিষ্প্রভ ও ঈষৎ। মুঠোয় মুঠো ধোরে, জোর চেপে,
রক্তকল্পে তিনদাগ, চার্দাগ মেপে, পর্দার মতো সারসার টানা, নকুলদানার চারিদিকে
ঘুর্ণমান ওল্লার অলঙ্কারে, আলগা ঢলোঢলো রক্তোপা দেখি, আলতা দেখি, রাস্তার
অন্ধকারে, দূরের লালনীল আলোয়, চ্ছলচ্ছল ভেসে ওঠে দুইমুহুর্তো, চার্মুহুর্তো,
অঙ্গাঙ্গী। মোম্বাতী জোড়িয়ে বা শিশুর মতো অন্ধকারে বেঢপ পোলতে অষ্টেপৃষ্টে,
তেলচিটে হোয়ে ওঠে হাতের তেলো, কানের আঁচিল, থোলের লোম, বা থলথলে সর্ব-স্ব থেকে
আলগোছে, কমনীয় ও বিলম্বিত লয়ে, শ্বেদবিন্দু, স্ফটিকের রাজকন্যা, ভালোদানোর দয়া,
কালোদানোর লুঠতরাজ।
এমন ভাবে অরুণ ফেরে। চারুবোতি ফেরে।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - মা বোলে ডাকে না ভরত
অনেক ছোটো ছোটো খণ্ডোত্ত থাবার মত, হুশহাশ ফুটকি ওড়ে, ভালোবাসার আকাশগঙ্গা
ভালোবাসার ডালিমের মতো ভালোবাসার জুপিটারে চপাস চপাস হামি, ওইরকম ফুটকি ফুটকিতে ঘন
সবুজ বনে শুঁড়তুলে হ্যাপিহাতি কিম্বা তেঁতুল বা পেঁপের আঠা মেখে নিন, অথবা কমলা
বিকালে হাম্বারবে গোমাতা গোবৎস খোঁজে, শটিঝাড়ে হুহু করে দয়াবান-দয়াবতী।
চারুবতী পুলকিত বেলেঘাস বাস্তু
চলচঞ্চল চলে সুমোদিত কক্ষে
বুকে তার ওগ্নি হবে মুখে মেখেমুখে ছাই
শুরু হবে ঘরবাটি লেবু-নুনে চম্পট চাঁদ
দীর্ঘতম ভালোবাসার মতো বসে থাকো অম্লান
সুদীর্ঘ ভালোবাসার মতো দয়াবান হয়ে থাকো সমাসীন
কুয়াশায় নীলনীল দাঁড়িয়ে থাক্তেই পারে, মুদে যাও লোলিতার পুষ্পকন্দ, সাগরে জারজ
পাহাড়, হে যুবক, যাও ভালোবাসার লেবুবাগানে, আমোদঘন চন্দ্রমল্লিকায়।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ – তোমার প্যাণ্টির ভিতর তিনকোটি নীলগোলাপ লাইটহাউসের মতো আলেয়া
কামিনীকে টেনে নেওয়া যাবে মখমল ঝরণার
একদিন মোহন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে সরু গোঁফ
চাকা ঘুর্ছিলো, অনেকেরই মনে হতেই পারে যে চাকা ঘুর্ছিলো না। এরকম অনেকেই যারা
সেরকম কারণ ঐটাই। তাদের মোদ্ধে অনেকেই
ভগোবান হতে চেয়েছিলো। ছোটো ছোটো শুঁড়-ও ছিলো অনেকেরি, ছায়ার কেতামাফিক ডালপালা,
সুধা। অশ্রুর মতো মাতাল আগোন্তুক, আন্দোলিত লোলা, ডোরাকাটা টুপি পরে তুষারের
হৃদয়ের কবরের গেলাসের প্রজ্ঞায় গোলাপগুচ্ছো ঘুমপাড়ানি শেষহীন নতুন স্নিগ্ধো
সুপ্রভাত যাযাবরের কাছে নিয়ে আসে সন্তপ্ত ভরতপাখি।
এই করুণ দিনান্তে কম্পন ও মূল কাঠামো মেপে, মাটিতে কোমোড়ে অ্যাকাকার কোরে নাও।
মা। মা-শুনি। বিরহিণী অনুবাত বা ফুটিয়ে তোলা – শুধু ঐটুকু ছেঁকে নি’। ফ্যান উথলে
ওঠে। পুঁজময় ফোঁড়া টিপে দাও আত্মদর্শনের হাত থেকে পাতাগুলো ও শব্দগুলো ছিঁড়ে। অথবা
টেবিলে নিভুনিভু ফুলদানীতে ফ্রেমে ফ্রেমে অস্ফুট পরম কারুমায়ায়!
চতুর্থ পরিচ্ছেদ - অই বেশ সে রাখাল্বালোক
গোরুদ্দুদ খায়।
তার শরীর ধুয়ে দিলো নির্ঝর – আলতো চিবুক ও চন্দ্রিমায়, অনেক জ্যোৎস্না ঠেলে
সেই রূপোলি মাছ উঠে এসে রূপোলি বালুকাবেলায় ড্যাবড্যাব চোখে তাকালো, টোটেমপোলে,
ওস্তাদ, পূর্বরাগ দ্যাখো, প্রথাগত অতীতের গোরোস্থানগুলি বিবর্ণ সেইরম, অথবা মেদুর
অন্যকিছু, জলপাই-জঙ্গল জেগে, ঘনিষ্ঠো ভায়োলিন ডুবে আধডোবা চাঁদেদের বিলে অলীক
একশোটা মাছ-মুখ ফুটে থাকো ম্লান, ফুঁপিয়ে মাংস ও স্বপ্নের মায়াময়, ফুঁপিয়ে
ইস্পাত-ক্ষতগুলো, বেথলেহেম, গোম্বুজ, খাটাপাইখানা।
হলফ করে বোলতে পারি যে আমরা ঘোড়াগুলোকে দেখেছি এবং ঘোড়াগুলো আছে। এই রিবন
বাতাসে কান্না ছড়ায় এবং অন্য কিছু ছড়ায় না। অপরাহ্ণে একটি হাঁ-করুণ, মা;
সায়াহ্নে একটি কল-করুণ, মা।
No comments:
Post a Comment